২০২৫ সালের একটি যুগান্তকারী গবেষণা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের অগ্রগতিতে ডায়েটারি ফ্যাট এবং অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমের মধ্যেকার জটিল সম্পর্ককে আলোকিত করেছে। ডঃ মারিয়াম এম. আলহিলি, ডঃ নাসির সাংওয়ান এবং ডঃ অ্যালেক্স মায়ার্সের নেতৃত্বে এই গবেষণাটি ইঁদুরের মডেল ব্যবহার করে দেখিয়েছে যে খাদ্যের ফ্যাটের গঠন অন্ত্রের অণুজীব সম্প্রদায়ের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে, যা পরবর্তীতে ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের বিকাশে ভূমিকা রাখে। এই ফলাফলগুলি ক্যান্সারের চিকিৎসায় খাদ্যতালিকাগত হস্তক্ষেপের সম্ভাবনাকে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে উচ্চ-ফ্যাটযুক্ত খাবার, বিশেষ করে স্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবারগুলি অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ তৈরি করে এবং প্রদাহ বৃদ্ধি করে, যা ক্যান্সারের বিকাশে সহায়ক হতে পারে। অন্যদিকে, অসম্পৃক্ত ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবারগুলি একটি স্বাস্থ্যকর মাইক্রোবায়াল পরিবেশ তৈরি করতে পারে, যা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার, কারণ এটি ইঙ্গিত দেয় যে খাদ্যের ফ্যাট কেবল পুষ্টি উপাদানই নয়, বরং অন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং ক্যান্সারের অগ্রগতির সক্রিয় নিয়ন্ত্রকও বটে।
অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম, যা লক্ষ লক্ষ অণুজীবের একটি জটিল বাস্তুতন্ত্র, হজম, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ক্যান্সারের মতো রোগের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খাদ্যাভ্যাস এই মাইক্রোবায়োমের ভারসাম্যকে সহজেই প্রভাবিত করতে পারে। এই গবেষণার ফলাফলগুলি এই ধারণাকে সমর্থন করে যে, নির্দিষ্ট ধরণের ফ্যাট গ্রহণ অন্ত্রের অণুজীবের গঠনে পরিবর্তন আনতে পারে, যা ক্যান্সারের জৈবিক প্রক্রিয়াগুলিকে প্রভাবিত করে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে, অসম্পৃক্ত ফ্যাটযুক্ত খাবারগুলি অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমের বৈচিত্র্য বাড়াতে পারে এবং প্রদাহ কমাতে পারে। এটি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। এই গবেষণাটি ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যক্তিগতকৃত পুষ্টির গুরুত্বের উপর জোর দেয়। ভবিষ্যতে, রোগীদের নির্দিষ্ট মাইক্রোবায়োমিক প্রোফাইলের উপর ভিত্তি করে খাদ্যতালিকা তৈরি করা যেতে পারে, যা ক্যান্সারের প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
এই গবেষণাটি একটি মাউস মডেলের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হলেও, এটি মানুষের স্বাস্থ্যের উপর ডায়েটারি ফ্যাট এবং অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমের প্রভাব সম্পর্কে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে। এই ফলাফলগুলি আরও ক্লিনিকাল গবেষণার জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করে এবং ক্যান্সারের চিকিৎসায় পুষ্টির ভূমিকাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার সম্ভাবনা তৈরি করে।