জাপানের ফুটবল জগতে এক নক্ষত্রের পতন। কিংবদন্তি ফুটবলার কাজুয়োশি মিউরা, যিনি 'কিং কাজু' নামে পরিচিত, ৮১ বছর বয়সে পরলোকগমন করেছেন। তার দীর্ঘ ও বর্ণিল কর্মজীবন জাপানের ফুটবলকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল। মিউরা ছিলেন একজন অসাধারণ স্ট্রাইকার, যিনি তার ক্যারিয়ারে অসংখ্য রেকর্ড গড়েছেন। তিনি ১৯৯৩ সালে জে-লিগে অভিষেক করেন এবং ২৫১টি ম্যাচে ২০২টি গোল করার এক অবিশ্বাস্য রেকর্ড স্থাপন করেন। এছাড়াও তিনি ৭৬টি আন্তঃক্লাব ম্যাচে ৭৫টি গোল করেছেন। তার এই গোল করার ক্ষমতা তাকে জাপানের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। ১৯৬৮ সালে মেক্সিকো সিটি অলিম্পিক ফুটবল দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে তিনি জাপানের প্রতিনিধিত্ব করেন।
মিউরার খেলোয়াড়ী জীবন শুরু হয়েছিল ব্রাজিলে, যেখানে তিনি তরুণ বয়সে একা পাড়ি জমিয়েছিলেন ফুটবল শেখার তাগিদে। এরপর তিনি ইতালির সিরি এ-তে খেলা প্রথম জাপানি খেলোয়াড় হিসেবে ইতিহাস তৈরি করেন। তার দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি ১৯৮০-এর দশক থেকে ২০২০-এর দশক পর্যন্ত পাঁচটি ভিন্ন দশকে পেশাদার ফুটবল খেলেছেন, যা এক বিরল কৃতিত্ব। কাজুয়োশি মিউরা শুধু একজন খেলোয়াড়ই ছিলেন না, তিনি ছিলেন এক অনুপ্রেরণা। তার বয়স যখন ৫০ বছর, তখনও তিনি জে-লিগে গোল করার রেকর্ড ভেঙেছেন। তিনি ছিলেন জাপানের প্রথম সুপারস্টার ফুটবলার, যার উত্থান জে-লিগের সূচনার সাথে সাথে ঘটেছিল। তার "কাজু ফেইন্ট" এবং "কাজু ডান্স" দর্শকদের মধ্যে খুব জনপ্রিয় ছিল। ফুটবল বিশ্বে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৯৩ সালে এশিয়ার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও তিনি জে-লিগের প্রথম এমভিপি (সবচেয়ে মূল্যবান খেলোয়াড়) হিসেবে নির্বাচিত হন। তার ভাই ইয়াসুতোশি মিউরাও একজন পেশাদার ফুটবলার ছিলেন। কাজুয়োশি মিউরার প্রয়াণ জাপানি ফুটবলের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তার অসামান্য প্রতিভা, দীর্ঘ কর্মজীবন এবং ফুটবলের প্রতি তার আজীবন উৎসর্গ তাকে স্মরণীয় করে রাখবে।
১৯৯৮ সালে তিনি জাপান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন, যা তার নেতৃত্বের গুণাবলীর প্রমাণ দেয়।