ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক (BI) বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে সক্রিয়ভাবে হস্তক্ষেপ করেছে যাতে ইন্দোনেশীয় রুপিয়ার পতন রোধ করা যায়। ২৯ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যখন রুপিয়া ১ আগস্ট, ২০২৫-এর পর থেকে তার সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে।
এই মুদ্রা অবমূল্যায়নের পাশাপাশি দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এবং স্টক মার্কেটের ২% পতনও লক্ষ্য করা গেছে, যা বাজারকে কিছুটা অস্থিতিশীল করে তুলেছে। তবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং স্টক এক্সচেঞ্জ নিয়ন্ত্রক সংস্থা উভয়েই দেশের অর্থনৈতিক মৌলিক বিষয়গুলো শক্তিশালী বলে আশ্বস্ত করেছে। ব্যাংক ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে যে তারা অফশোর এবং অনশোর নন-ডেলিভারেবল ফরোয়ার্ড (NDF) বাজার এবং স্পট মার্কেটে সক্রিয় থাকবে, যাতে রুপিয়ার বিনিময় হার অর্থনৈতিক মৌলিক বিষয়গুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে। এছাড়াও, ব্যাংকটি মাধ্যমিক বাজারে সরকারি বন্ড কেনা অব্যাহত রাখবে।
রুপিয়ার এই অবমূল্যায়ন এমন এক সময়ে ঘটেছে যখন ইন্দোনেশিয়ার স্টক সূচক ২% হ্রাস পেয়ে ১২ আগস্টের পর থেকে সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে। এই বাজার অস্থিরতার মধ্যে, আইনপ্রণেতাদের বেতন বৃদ্ধি এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভও চলছিল, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছিল।
অর্থনৈতিক বিষয়ক সমন্বয় মন্ত্রী এয়ারলাঙ্গা হার্টার্তো জোর দিয়ে বলেছেন যে ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতি মৌলিকভাবে শক্তিশালী। তিনি দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (Q2) ৫.১২% জিডিপি প্রবৃদ্ধি, উৎপাদন খাতের PMI-এর ৫০-এর উপরে থাকা এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকার মতো বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও, জুলাই ২০২৫-এ স্বাক্ষরিত মার্কিন-ইন্দোনেশিয়া বাণিজ্য চুক্তি, যা মূল রপ্তানির উপর শুল্ক হ্রাস করেছে এবং পাম তেল ও কোকোর মতো পণ্যের জন্য শুল্ক ছাড় দিয়েছে, তা রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী করার জন্য, ইন্দোনেশিয়া সরকার ১ মার্চ, ২০২৫ থেকে রপ্তানিকারকদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করেছে। এই নিয়মানুসারে, নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক সম্পদ রপ্তানিকারকদের তাদের রপ্তানি আয় ১২ মাসের জন্য ইন্দোনেশিয়ার ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ধরে রাখতে হবে। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বৃদ্ধি করা এবং রুপিয়ার স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।
যদিও রুপিয়া বছর শুরু থেকে প্রায় ২.৩৫% দুর্বল হয়েছে, ব্যাংক ইন্দোনেশিয়ার হস্তক্ষেপ এবং রপ্তানি নীতির মাধ্যমে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, ব্যাংক ইন্দোনেশিয়ার সক্রিয় ভূমিকা এবং সরকারের ইতিবাচক অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বাজারকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে। যদিও বিক্ষোভ এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ কারণগুলো স্বল্পমেয়াদী অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে, দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী থাকার কারণে দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।