ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় রাশিয়ার তেল পরিকাঠামো বিপর্যস্ত, মূল্যবৃদ্ধি

সম্পাদনা করেছেন: w w

ইউক্রেন রাশিয়ার তেল ও গ্যাস পরিকাঠামোতে ড্রোনের মাধ্যমে আক্রমণ তীব্র করেছে, যার ফলে রাশিয়ার অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে এবং অভ্যন্তরীণ জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এই আক্রমণগুলি রাশিয়ার তেল শোধনাগার এবং রপ্তানি পরিকাঠামোকে লক্ষ্য করে চালানো হচ্ছে, যার উদ্দেশ্য হলো রাশিয়ার যুদ্ধ তহবিল সংগ্রহে বাধা দেওয়া এবং তাদের যুদ্ধ ক্ষমতাকে দুর্বল করা।

সাম্প্রতিক তথ্যানুসারে, ইউক্রেনীয় ড্রোনের হামলায় রাশিয়ার প্রায় ১৭% তেল শোধনাগার ক্ষমতা, যা প্রতিদিন প্রায় ১.১ মিলিয়ন ব্যারেলের সমতুল্য, তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই আক্রমণগুলি আগস্ট ২০২৫-এর বিভিন্ন তারিখে, বিশেষ করে ২১শে এবং ২৪শে আগস্টে ঘটেছে। এর ফলে রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে পেট্রোলের ঘাটতি দেখা দিয়েছে এবং কিছু এলাকায়, যেমন কুরিল দ্বীপপুঞ্জে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে প্রতি ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ লিটার পেট্রোল বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই পরিস্থিতি রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই ইউক্রেন রাশিয়ার অর্থনীতিকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়ে আসছে। বিশেষ করে, এই ড্রোন হামলাগুলি রাশিয়ার তেল শোধনাগারগুলিকে লক্ষ্য করে চালানো হচ্ছে, যা তাদের যুদ্ধ অর্থনীতিকে সরাসরি আঘাত করছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (HUR) এই আক্রমণগুলিকে 'আগ্রাসনের যুদ্ধ অর্থনীতিকে' দুর্বল করার একটি কৌশল হিসেবে বর্ণনা করেছে।

রাশিয়ার জ্বালানি মন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক জ্বালানি রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব সমর্থন করেছেন, যাতে অভ্যন্তরীণ বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা যায়। যদিও রাশিয়া এই আক্রমণগুলির প্রতিক্রিয়া হিসেবে তাদের রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে, তবুও দেশের অভ্যন্তরে পেট্রোলের দাম প্রায় ২৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ঘটনাগুলি বিশ্ব বাজারেও প্রভাব ফেলেছে, কারণ রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম প্রধান তেল রপ্তানিকারক দেশ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেনের এই কৌশল রাশিয়ার যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষমতাকে খর্ব করার পাশাপাশি শান্তি আলোচনার ক্ষেত্রে তাদের দর কষাকষির ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। এই হামলাগুলি রাশিয়ার বিশাল ভৌগোলিক বিস্তৃতিকে তাদের দুর্বলতা হিসেবে ব্যবহার করার একটি প্রচেষ্টা, কারণ দেশটির পক্ষে দেশের এত বিশাল অঞ্চল জুড়ে থাকা অসংখ্য সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তুকে রক্ষা করার জন্য পর্যাপ্ত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই। এই পরিস্থিতি বিশ্ব বাজারে তেলের দামে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

উৎসসমূহ

  • Deutsche Welle

  • Reuters

  • Reuters

  • Financial Times

  • UNIAN

  • Українська правда

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।

ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় রাশিয়ার তেল পরিক... | Gaya One