শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর আনন্দের গভীর প্রভাব নিয়ে নতুন গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে, যা একে অন্যান্য আবেগ থেকে আলাদা করে তুলেছে। আনন্দ প্রায়শই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন এবং বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা লাভের সাথে যুক্ত থাকে, যা একটি খাঁটি “ডুচেন স্মাইল” (Duchenne smile) হিসেবে প্রকাশ পায়। এই হাসি মুখের পেশী ও চোখকে সক্রিয় করে তোলে এবং মস্তিষ্কের আনন্দ কেন্দ্রগুলিকে উদ্দীপ্ত করে।
এই মানসিক অবস্থা ডোপামিন, অক্সিটোসিন, সেরোটোনিন এবং এন্ডোরফিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ হরমোন নিঃসরণ করে, যা শারীরিক পরিবর্তনের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এই নিউরোকেমিক্যালগুলি মেজাজ নিয়ন্ত্রণ এবং সামগ্রিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। আনন্দকে শক্তিশালী করার জন্য ব্যক্তিগত সম্পর্ক উন্নত করা, কৃতজ্ঞতা অনুশীলন করা এবং সহনশীলতা গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ। ইতিবাচক মনোবিজ্ঞানের পথিকৃৎ মার্টিন সেলিগম্যান এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের গবেষণা এই বিষয়গুলোকে সমর্থন করে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতাগুলি কেবল মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিই করে না, বরং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং দীর্ঘ জীবন লাভে সহায়তা করে। “ডুচেন স্মাইল” বা প্রকৃত হাসি, যা চোখ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়, তা মানসিক চাপ কমাতে এবং ইতিবাচক অনুভূতি বাড়াতে সাহায্য করে। এটি সামাজিক সম্পর্ককেও উন্নত করে, কারণ এই ধরনের হাসি বিশ্বাস এবং উষ্ণতা প্রকাশ করে।
কৃতজ্ঞতা অনুশীলন এবং শক্তিশালী ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তোলাও আনন্দের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। মার্টিন সেলিগম্যানের কাজগুলি দেখায় যে, কৃতজ্ঞতা এবং ইতিবাচক সম্পর্কগুলি মানসিক স্থিতিস্থাপকতা এবং জীবনের অর্থ খুঁজে পেতে সহায়ক। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘমেয়াদী গবেষণাগুলিও নিশ্চিত করে যে, সুস্থ ও দীর্ঘ জীবনের জন্য মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যারা নিয়মিত আনন্দ ও কৃতজ্ঞতা অনুশীলন করেন, তাদের দীর্ঘজীবী হওয়ার এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে দূরে থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এই ইতিবাচক মানসিকতা জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়ক এবং সামগ্রিক সুস্থতা বৃদ্ধি করে।