চীনের তিয়ানজিনে ৩১শে আগস্ট থেকে ১লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অংশগ্রহণ করেন। সাত বছর পর প্রধানমন্ত্রীর এই চীন সফর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের এক নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত বহন করে। এই সম্মেলনটি আঞ্চলিক সহযোগিতা, নিরাপত্তা, অর্থনীতি এবং সংস্কৃতির প্রসারে এসসিও-র ক্রমবর্ধমান গুরুত্বকে তুলে ধরে।
তিয়ানজিনে আয়োজিত এই শীর্ষ সম্মেলনে চীন, ভারত, রাশিয়া সহ ২০টিরও বেশি দেশের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এটি ছিল সংগঠনের ইতিহাসে অন্যতম বৃহত্তম সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী মোদী এই সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন, যেখানে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা, বাণিজ্য প্রসার এবং আঞ্চলিক পরিকাঠামো উন্নয়ন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও সম্মেলনে আলোচিত হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সীমান্ত বিরোধ এবং অন্যান্য মতপার্থক্যের কারণে ভারত ও চীনের মধ্যে যে উত্তেজনা ছিল, তা প্রশমিত করার ক্ষেত্রে মোদীর এই সফর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তিয়ানজিনে এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের সক্রিয় অংশগ্রহণ বহুপাক্ষিক সহযোগিতায় দেশটির নতুন অবস্থানকে প্রতিফলিত করে। বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, এই সফর আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশগুলোর মধ্যে সংলাপ ও সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তাকে আরও একবার স্পষ্ট করে তোলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সম্মেলনটি কেবল একটি আঞ্চলিক জোটের বৈঠক ছিল না, বরং এটি বিশ্ব মঞ্চে ভারতের কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন প্রদর্শনের একটি প্ল্যাটফর্ম ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বিরোধের মধ্যে, ভারত চীন ও রাশিয়ার মতো দেশগুলির সাথে সম্পর্ক জোরদার করার মাধ্যমে তার বিকল্প পথ খোলা রেখেছে। এই কূটনৈতিক চাল ভারতের নিজস্ব স্বার্থ এবং নিরাপত্তা নীতিগুলির প্রতি তার দৃঢ় অঙ্গীকারকে তুলে ধরেছে। তিয়ানজিন শীর্ষ সম্মেলন প্রমাণ করেছে যে ভারত একটি সক্রিয় খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্ব মঞ্চে নিজের অবস্থান তৈরি করছে, যেখানে সে একই সাথে সহযোগিতা এবং মতপার্থক্য উভয়ই বজায় রাখতে সক্ষম। আশা করা হচ্ছে, এই সম্মেলনের পর ভারত ও চীনের সম্পর্ক আরও ইতিবাচক দিকে অগ্রসর হবে।