আগামী ২৯-৩০ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলনে রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা জোরদার করার কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হবে। ডেনমার্কের আয়োজনে এই বৈঠকে নরওয়ে, যুক্তরাজ্য এবং আইসল্যান্ডের প্রতিনিধিরাও অংশ নেবেন।
রাশিয়ার ছায়া নৌবহর (shadow fleet) কার্যক্রম প্রতিহত করার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হবে। এই ছায়া নৌবহর মূলত নিষেধাজ্ঞাকে এড়িয়ে তেল রপ্তানির জন্য ব্যবহৃত হয় এবং এটি রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই ছায়া নৌবহরের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আলোচনা করছে, যার মধ্যে নির্দিষ্ট জাহাজ, ক্যাপ্টেন এবং ব্রোকারদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত। পূর্ববর্তী নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে, ইইউ এমন জাহাজগুলির প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে যা রাশিয়ার তেল আমদানি নিষেধাজ্ঞা বা মূল্যসীমা লঙ্ঘনের সন্দেহভাজন।
ইউক্রেনের প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অঙ্গীকার অব্যাহত রয়েছে। বৈঠকে ইউক্রেনের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা গ্যারান্টি এবং রাশিয়ার দখলকৃত সম্পদ ব্যবহার করে ইউক্রেনের পুনর্গঠনের বিষয়গুলোও আলোচিত হবে। প্রায় ২১০ বিলিয়ন ইউরো সমমূল্যের রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ ইউরোপীয় ইউনিয়নে জব্দ করা হয়েছে, যা ইউক্রেনের সহায়তার জন্য ব্যবহার করার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা চলছে। যদিও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার বিষয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ভিন্ন মত রয়েছে, তবে রাশিয়াকে যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে – এই বিষয়ে সকলের ঐকমত্য রয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই উদ্যোগটি 'রিআর্ম ইউরোপ' (ReArm Europe) পরিকল্পনার ধারাবাহিকতা, যা সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণীত হয়েছে। এই পরিকল্পনার আওতায় প্রায় ৮০০ বিলিয়ন ইউরোর প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার মধ্যে একটি নতুন ১৫০ বিলিয়ন ইউরোর 'সিকিউরিটি অ্যাকশন ফর ইউরোপ' (SAFE) ঋণ উপকরণও অন্তর্ভুক্ত। এই তহবিলের মাধ্যমে যৌথ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সংগ্রহ এবং ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা রয়েছে।