নাসার সাইকি মহাকাশযান পৃথিবী ও চাঁদের দূরবর্তী চিত্র ধারণ করল

সম্পাদনা করেছেন: Dmitry Drozd

মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন মাইলফলক স্থাপন করে নাসার সাইকি মহাকাশযান সম্প্রতি পৃথিবী ও চাঁদের কিছু মনোমুগ্ধকর চিত্র ধারণ করেছে। প্রায় ১৮০ মিলিয়ন মাইল (২৯০ মিলিয়ন কিলোমিটার) দূর থেকে এই ছবিগুলো তোলা হয়েছে, যা মহাকাশযানটির যন্ত্রাংশ ক্রমাঙ্কনের (instrument calibration) অংশ হিসেবে সম্পন্ন হয়েছে। এই অভিযান নাসার সাইকি মিশনের অগ্রগতি ও সক্ষমতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা গ্রহের কেন্দ্রস্থলের উৎস অনুসন্ধানের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

সাইকি মহাকাশযানটি বর্তমানে ১৬ সাইকি নামক একটি ধাতব গ্রহাণুর দিকে যাত্রা করছে। এই যাত্রাপথে, মহাকাশযানটি তার দুটি ক্যামেরার মাধ্যমে পৃথিবী ও চাঁদকে নক্ষত্রখচিত পটভূমিতে ছোট ছোট বিন্দুর মতো করে তুলেছে। এই চিত্রগুলি মহাকাশযানটির সেন্সরগুলির কার্যকারিতা যাচাই করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানীরা এই ধরনের ক্রমাঙ্কন পরীক্ষাগুলির জন্য এমন বস্তু নির্বাচন করেন যা গ্রহাণু সাইকির মতোই সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে উজ্জ্বল হয়। এই পরীক্ষাগুলি নিশ্চিত করে যে মহাকাশযানটির ক্যামেরাগুলি বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত।

২০২৫ সালের জুলাই মাসে, নির্দিষ্ট তারিখে (জুলাই ২০ এবং জুলাই ২৩) মহাকাশযানটির টুইন ক্যামেরাগুলি দীর্ঘ-এক্সপোজার (১০ সেকেন্ড পর্যন্ত) ছবি তোলে। এই ছবিগুলিতে, পৃথিবী এবং চাঁদকে মেষ রাশির (constellation Aries) পটভূমিতে জ্বলজ্বল করতে দেখা যায়। এই চিত্রগুলি মহাকাশযানটির মাল্টিস্পেকট্রাল ইমেজার যন্ত্রাংশের কার্যকারিতা প্রমাণ করে। এই যন্ত্রাংশটি বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো সনাক্ত করতে সক্ষম, যা ১৬ সাইকি গ্রহাণুর গঠন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদানে সহায়ক হবে।

সাইকি মিশনের মূল লক্ষ্য হলো ১৬ সাইকি গ্রহাণুটিকে অধ্যয়ন করা, যা একটি আদিম গ্রহের ধাতব কেন্দ্র হিসাবে বিবেচিত হয়। মহাকাশযানটি ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে উৎক্ষেপিত হয়েছিল এবং ২০২৯ সালের আগস্ট মাসে এটি ১৬ সাইকি গ্রহাণুতে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে। এই মিশনের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা গ্রহের কেন্দ্রস্থলের গঠন এবং পৃথিবীর মতো পার্থিব গ্রহগুলির উৎপত্তির বিষয়ে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি লাভ করতে পারবেন। এই চিত্রগুলি কেবল মহাকাশযানটির স্বাস্থ্য এবং প্রস্তুতিই নিশ্চিত করে না, বরং এটি মহাকাশ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে নাসার অগ্রণী ভূমিকারও প্রতিফলন ঘটায়। এই অর্জনটি মহাকাশযানটির সিস্টেমের বৈধতা প্রমাণ করে এবং গ্রহের কেন্দ্রস্থলের উপর এর যুগান্তকারী অনুসন্ধানের জন্য প্রত্যাশা বাড়িয়ে তোলে।

উৎসসমূহ

  • Space.com

  • NASA’s Psyche Captures Images of Earth, Moon

  • NASA's Psyche Images Earth and Moon

  • See that tiny dot? That's us, from 290 million km away. Spacecraft spies Earth and Moon on its journey to asteroid

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।