একটি যুগান্তকারী নতুন গবেষণা অনুসারে, আমাদের সৌরজগতের বাইরের গ্রহগুলিতে, যা এক্সোপ্ল্যানেট নামে পরিচিত, ডার্ক ম্যাটার জমা হওয়ার ফলে অভ্যন্তরীণ ব্ল্যাক হোল তৈরি হতে পারে। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, রিভারসাইডের গবেষকরা এই তত্ত্বটি উপস্থাপন করেছেন, যা মহাবিশ্বের এক রহস্যময় উপাদান ডার্ক ম্যাটারকে বোঝার জন্য একটি নতুন পথ খুলে দিতে পারে। এই গবেষণাটি ২০২৫ সালের ২০শে আগস্ট ফিজিক্যাল রিভিউ ডি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণার প্রধান লেখক মেহরাদ ফোরৌতান-মেহর এবং তার সহকর্মী তারা ফেথারোলফের মতে, সুপারহেভি ডার্ক ম্যাটার কণাগুলি এক্সোপ্ল্যানেটের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে শক্তি হারাতে পারে এবং গ্রহের কেন্দ্রে জমা হতে পারে। যখন এই ডার্ক ম্যাটারের পরিমাণ একটি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করে, তখন এটি ভেঙে পড়ে একটি ব্ল্যাক হোল তৈরি করে। এই ব্ল্যাক হোলের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে তার ভরের উপর। যদি এটি বেশি ভারী হয়, তবে এটি গ্রহের উপাদানকে গ্রাস করতে শুরু করতে পারে, অথবা যদি এটি কম ভরের হয়, তবে এটি হকিং রেডিয়েশনের মাধ্যমে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এই প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণযোগ্য সময়ের মধ্যে ঘটতে পারে, এমনকি একটি এক্সোপ্ল্যানেটের জীবনকালে একাধিক ব্ল্যাক হোলও তৈরি হতে পারে। ডার্ক ম্যাটার মহাবিশ্বের প্রায় ৮৫% গঠন করে, কিন্তু এটি সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা যায়নি। এর অস্তিত্ব কেবল মহাকর্ষীয় প্রভাবের মাধ্যমে জানা যায়। এই নতুন গবেষণাটি ডার্ক ম্যাটার অধ্যয়নের জন্য একটি অভিনব পদ্ধতি প্রদান করে, যা এক্সোপ্ল্যানেট পর্যবেক্ষণের সাথে যুক্ত।
গবেষকরা মনে করেন যে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রের মতো ডার্ক ম্যাটার সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলিতে অবস্থিত এক্সোপ্ল্যানেটগুলি এই সুপারহেভি ডার্ক ম্যাটার কণাগুলি অনুসন্ধানের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী হতে পারে। এই তত্ত্বটি মহাকাশ বিজ্ঞানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র - ডার্ক ম্যাটার পদার্থবিদ্যা এবং এক্সোপ্ল্যানেট বিজ্ঞান - এর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। যদিও এই ধারণাটি এখনও তাত্ত্বিক পর্যায়ে রয়েছে, তবে এটি ডার্ক ম্যাটারের প্রকৃতি এবং মহাবিশ্বে এর ভূমিকা সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে আরও প্রসারিত করতে পারে। ভবিষ্যতের উন্নত টেলিস্কোপ এবং মহাকাশ মিশনগুলি এই তত্ত্বকে পরীক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় ডেটা সরবরাহ করতে পারে।