সাম্প্রতিক গবেষণা কুকুরদের মানসিক বুদ্ধিমত্তার গভীরে প্রবেশ করেছে, যা মানুষের আবেগ সনাক্তকরণ এবং প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষেত্রে তাদের অসাধারণ ক্ষমতাকে তুলে ধরেছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, কুকুররা তাদের মালিকদের মানসিক অবস্থা সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন এবং সেই অনুযায়ী তাদের আচরণ পরিবর্তন করে। এর মধ্যে রয়েছে তাদের আবদার করার কৌশল পরিবর্তন করা এবং মালিকদের প্রতি সহায়ক আচরণ প্রদর্শন করা। গবেষণার মূল বিষয়বস্তু হলো কুকুরদের মানসিক বুদ্ধিমত্তা এবং মানুষের আবেগ ও সামাজিক সংকেতের প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়া। এই গবেষণাগুলি প্রমাণ করে যে, কুকুররা মানুষের আবেগ বুঝতে এবং তাতে সাড়া দিতে সক্ষম, যা মানুষ ও কুকুরের মধ্যে গভীর বন্ধনের ইঙ্গিত দেয়। এই গবেষণাগুলি ২০১৬, ২০১৮, ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, কুকুররা মানুষের মুখের ভাবভঙ্গি, শারীরিক ভাষা এবং কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে তাদের আবেগ বুঝতে পারে। একটি ২০২৪ সালের গবেষণায় ২৯টি প্রাপ্তবয়স্ক কুকুরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, যেখানে তারা মানুষের কান্নার শব্দের প্রতি ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়। এই কুকুরগুলি মানুষের কান্নার সময় আরও বেশি মানসিক চাপ এবং অস্থিরতা প্রকাশ করে, যা তাদের সহানুভূতিশীল প্রকৃতির ইঙ্গিত দেয়। অন্য একটি ২০২৫ সালের গবেষণায় ৬৫০টি স্বাধীনভাবে বিচরণকারী কুকুরকে পর্যবেক্ষণ করা হয়। একটি ২০১৬ সালের গবেষণায় ১৭টি কুকুরকে নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছিল, যেখানে কুকুররা মানুষের আবেগপূর্ণ অভিব্যক্তি এবং কণ্ঠস্বরের মধ্যে সমন্বয় স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিল। তারা মানুষের আনন্দ ও দুঃখের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে এবং সেই অনুযায়ী তাদের আচরণ পরিবর্তন করে। গবেষণা আরও প্রকাশ করে যে, কুকুররা মানুষের ইতিবাচক বা নেতিবাচক আবেগ বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী তাদের আচরণে পরিবর্তন আনে। উদাহরণস্বরূপ, যখন মালিকরা খুশি থাকেন, তখন কুকুররা প্রশিক্ষণে ভালো পারফর্ম করে। অন্যদিকে, মালিকদের দুঃখ বা মন খারাপ থাকলে কুকুররা কম মনোযোগী হয় এবং তাদের আচরণে পরিবর্তন দেখা যায়। এটি প্রমাণ করে যে, কুকুররা কেবল মানুষের কথা শুনেই নয়, তাদের আবেগ অনুভব করেও প্রতিক্রিয়া জানায়। এই গবেষণাগুলি মানুষের সাথে কুকুরের সম্পর্কের গভীরতা এবং তাদের জ্ঞানীয় ক্ষমতা সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে আরও সমৃদ্ধ করে। এটি পোষা প্রাণী মালিকানা এবং প্রাণীজগতের জ্ঞানীয় ক্ষমতা বোঝার ক্ষেত্রে নতুন দিক উন্মোচন করে। কুকুরদের এই মানসিক বুদ্ধিমত্তা কেবল তাদের পোষা প্রাণী হিসেবেই নয়, বরং সহানুভূতিশীল সঙ্গী হিসেবেও তাদের গুরুত্ব বাড়িয়ে তোলে।