জুলাই ২০২৫-এর ৮ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ যুক্তরাজ্য সফর করেন, যা উইন্ডসর ক্যাসেলে অনুষ্ঠিত হয়। এই ঐতিহাসিক সফরটি দুই দেশের মধ্যেকার দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি ব্রেক্সিটের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের প্রথম যুক্তরাজ্য সফর এবং দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্ককে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার একটি সুযোগ তৈরি করেছে।
উইন্ডসর ক্যাসল, যা বিশ্বের প্রাচীনতম এবং বৃহত্তম অধ্যুষিত দুর্গ, এই রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। ১১ শতকে উইলিয়াম দ্য কনকারর কর্তৃক নির্মিত এই দুর্গটি সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন শাসকের হাতে নতুন রূপ লাভ করেছে। বিশেষ করে, এডওয়ার্ড তৃতীয়ের শাসনামলে এটি একটি গথিক প্রাসাদে রূপান্তরিত হয়েছিল, যা এর স্থাপত্যিক গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এই দুর্গটি কেবল ঐতিহাসিক তাৎপর্যই বহন করে না, বরং এটি ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের একটি সক্রিয় কেন্দ্রও বটে।
ম্যাক্রোঁর এই সফরটি ফরাসি-ব্রিটিশ সম্পর্কের গুরুত্বকে তুলে ধরেছে। এই উপলক্ষে, উইন্ডসর ক্যাসেলে আয়োজিত বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা ও কূটনৈতিক বৈঠকগুলো দুই দেশের মধ্যেকার অংশীদারিত্বের নতুন দিক উন্মোচন করেছে। সেন্ট জর্জ চ্যাপেল, যা পারপেন্ডিকুলার গথিক স্থাপত্যের এক उत्कृष्ट নিদর্শন, এই সফরের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। এই চ্যাপেলটি বহু রাজকীয় অনুষ্ঠান, বিবাহ এবং সমাহিতকরণের সাক্ষী, যেখানে ইংল্যান্ডের অনেক রাজা-রাণীর সমাধি রয়েছে, যার মধ্যে হেনরি অষ্টম এবং চার্লস প্রথমও অন্তর্ভুক্ত।
এই সফরটি কেবল কূটনৈতিক এবং ঐতিহাসিক তাৎপর্যই বহন করে না, বরং এটি দুই দেশের মধ্যেকার সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানকেও উৎসাহিত করেছে। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন যে, এই সফরটি দুই দেশের মধ্যেকার বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে এবং নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। বিশেষ করে, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, বাণিজ্য এবং সংস্কৃতির মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।