মিশরের গেজা মহাপিরামিডের অভ্যন্তরে সম্প্রতি পৌরাতাত্ত্বিক গবেষণায় আমরা এটির নির্মাণ সম্পর্কে পূর্বধারণাকে বদলে দিয়েছি। দীর্ঘদিন ধরে যেসব ধারণা প্রচলিত ছিল যে এই মহাস্মৃতি নির্মাণ করেছিল দাসরা, তা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা তথ্য পাওয়া গেছে—এটি তৈরি করেছিল দক্ষ ও পারিশ্রমিকভোগী শ্রমিকরা।
মিশরবিদ ড. জাহি হাওয়াস এবং তার দল উন্নত ইমেজিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিংস চেম্বারের উপরের সংকীর্ণ কক্ষগুলি পরিদর্শন করেন। সেখানে ১৩শ শতাব্দী খ্রিস্টপূর্বাব্দের কাজের দলের ছাপ পাওয়া যায়, যা আগে কখনও দেখা যায়নি। এই লিখনভঙ্গি শুধুমাত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিশরবিদরা সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেন।
তারা পিরামিডের দক্ষিণে কিছু সমাধিস্তলও আবিষ্কার করেন, যা দক্ষ শ্রমিকদের চিরবিশ্রামের স্থান। সেখানে পাওয়া মূর্তিগুলোতে শ্রমিকরা পাথর বহন করছে এমন দৃশ্য চিত্রিত ছিল এবং ২১টি হায়ারোগ্লিফিক শিরোনাম যেমন ‘পিরামিডের পাশে তত্বাবধায়ক’ ও ‘কারিগর’ লেখা ছিল। ড. হাওয়াস বলেন, যদি ওরা দাস হত, তাহলে তাদের পিরামিডের ছায়াতলে শেষাশ্রম হতো না।
এই নতুন তথ্য নির্মাণ পদ্ধতিতেও আলোকপাত করেছে। মাত্র ১,০০০ ফুট দূরের একটি খনি থেকে চুনাপাথর নিয়ে আসা হত মাটির ফোঁটা ও পাথরের ভরাট রামের মাধ্যমে, যার অবশিষ্টাংশ পিরামিডের দক্ষিণপশ্চিমে পাওয়া গেছে। ড. হাওয়াস এখন ম্যাট বিয়ালের অর্থায়নে নতুন অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছেন, যেখানে একটি রোবট মহাপিরামিডে পাঠানো হবে—এটি আধুনিক সময়ের ইতিহাসে প্রথম খনন কার্যক্রম।
এই অনুসন্ধানগুলো প্রাচীন মিশরীয় শ্রমিকদের জীবন ও কাজের শর্তাবলী সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য দিয়েছে এবং পুরনো ভুল ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে।