মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণার ফলে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য যুদ্ধ নতুন রূপ নিয়েছে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতি সহ বিভিন্ন দেশের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
২০২৫ সালের ৭ই জুলাই ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, কাজাখস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, লাওস এবং মায়ানমারের উপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসে। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাণিজ্য ঘাটতি কমানো। এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ।
এই শুল্ক আরোপের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। শেয়ার বাজারে দরপতন হয় এবং বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন। ব্রিকস দেশগুলো এই শুল্কের তীব্র সমালোচনা করেছে, যার ফলস্বরূপ ট্রাম্প “মার্কিন-বিরোধী” ব্রিকস নীতি সমর্থনকারী দেশগুলোর উপর ১০% শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর সম্ভাব্য প্রভাব বিবেচনা করা জরুরি। তৈরি পোশাক, চামড়া এবং পাট শিল্পের মতো প্রধান রপ্তানি খাতে শুল্কের কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম অনুযায়ী, শুল্ক আরোপের ফলে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের উচিত হবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া। বাণিজ্য চুক্তি এবং কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে শুল্কের প্রভাব কমানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। এছাড়াও, অভ্যন্তরীণ বাজারকে শক্তিশালী করতে এবং রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণেও জোর দিতে হবে।
পরিশেষে, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। এর ফলে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠেছে এবং বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়া অপরিহার্য।