অভ্যাস গঠন অনেক সময় কঠিন মনে হতে পারে, বিশেষ করে যখন আমরা লক্ষ্য পূরণের জন্য অতিরিক্ত চাপ অনুভব করি। মুম্বাই-ভিত্তিক উদ্যোক্তা Vedika Bhaia একটি সহজ এবং কার্যকর ৫-ধাপের পদ্ধতি শেয়ার করেছেন, যা কঠিন দিনগুলোতেও ধারাবাহিক অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করে। তাঁর এই পদ্ধতিটি মূলত সরলতা এবং কম প্রত্যাশার উপর জোর দেয়, যা দীর্ঘসূত্রিতা ও অবসাদ কাটিয়ে উঠতে সহায়ক।
Bhaia-এর পদ্ধতির মূল বিষয় হলো 'Worst Day Test' বা 'সবচেয়ে খারাপ দিনের পরীক্ষা'। এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতেও ন্যূনতম কোন কাজটি করা সম্ভব। তিনি জোর দেন যে, অভ্যাসগুলোকে "অবিশ্বাস্যভাবে ছোট" রাখা উচিত, যেখানে একটি অর্জনযোগ্য কাজের উপর মনোযোগ দেওয়া হয়, অনেকগুলো লক্ষ্য একসাথে পূরণের চেষ্টা না করে। এই "ক্ষুদ্র অভ্যাস" বা "মাইক্রো-হাবিট"-এর ধারণাটি মনোবিজ্ঞানীদের দ্বারা সমর্থিত, কারণ এটি মস্তিষ্কের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায় এবং ধারাবাহিকতা বাড়াতে সাহায্য করে। BJ Fogg-এর মতো বিশেষজ্ঞরা বলেন যে, ছোট পরিবর্তনগুলো কম প্রচেষ্টায় স্বয়ংক্রিয় হয়ে যায়, যা দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের ভিত্তি তৈরি করে।
অভ্যাসকে নিয়মিত করার জন্য Bhaia "Two-Week Rule" বা "দুই সপ্তাহের নিয়ম" অনুসরণ করার পরামর্শ দেন। এর অর্থ হলো, এই ন্যূনতম কাজগুলো ১৪ দিন ধরে করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া। অনেকেই অতিরিক্ত প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার কারণে ব্যর্থ হন, কিন্তু Bhaia-এর কৌশল হলো "অবিশ্বাস্যভাবে কম লক্ষ্য" নির্ধারণ করা। এই ছোট পদক্ষেপগুলো, যখন বিদ্যমান অভ্যাসের সাথে যুক্ত করা হয় (যেমন দাঁত ব্রাশ করার পর একটি নির্দিষ্ট কাজ করা), তখন তা অভ্যাস গঠনকে সহজ করে তোলে। এই "হাবিট স্ট্যাকিং" পদ্ধতিটি মস্তিষ্ককে নতুন আচরণ মনে রাখতে সাহায্য করে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্লান্তি কমায়।
ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য Bhaia একটি সহজ ট্র্যাকিং পদ্ধতির উপর জোর দেন। তিনি একটি ক্যালেন্ডারে প্রতিদিন একটি "X" চিহ্ন দেওয়ার মতো সাধারণ ভিজ্যুয়াল ট্র্যাকিংয়ের কথা বলেন। এই সাধারণ পদ্ধতিটি ডিজিটাল জটিলতা ছাড়াই জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে। অভ্যাস ট্র্যাকিংয়ের সুবিধাগুলো হলো এটি অগ্রগতি দৃশ্যমান করে, প্রেরণা বাড়ায় এবং প্যাটার্ন শনাক্ত করতে সাহায্য করে। এটি মানুষকে তাদের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করে এবং তাদের যাত্রার একটি রেকর্ড রাখে।
Bhaia সতর্ক করেন যে, ধারাবাহিকতা অর্জনের পরেই অভ্যাসগুলোকে বড় করা উচিত। তিনি বলেন, যদি এক মাসে দুই দিনের বেশি কোনো অভ্যাস বাদ যায়, তবে বুঝতে হবে অভ্যাসটি এখনও বেশি উচ্চাভিলাষী। তাই, প্রথমে ধারাবাহিকতা আয়ত্ত করা এবং তারপর ধীরে ধীরে অভ্যাসের পরিধি বাড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ। এই পদ্ধতিটি কেবল অভ্যাস গঠনকেই সহজ করে না, বরং দীর্ঘমেয়াদী ব্যক্তিগত বিকাশের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তিও তৈরি করে।